ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ক্রমান্বয়ে শক্তি সঞ্চয় করছে। একই সঙ্গে এগিয়ে আসছে উপকূলের দিকে। আজ সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে আজ দুপুর ৩টার পর থেকেই খুলনা ও বরিশালের উপকূলীয় এলাকায় উচ্চ গতির বাতাস বইতে শুরু করবে। সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বাতাস সর্বোচ্চ গতিবেগে বয়ে যাবে।
বিকেল ৫টার আগে থেকেই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এই জলবায়ু গবেষক।
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং যেহেতু দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হচ্ছে তাই ঘূর্ণিঝড়-কেন্দ্রে নিম্নচাপের কারণে ওই স্থানের পানির সমতল উঁচু হয়ে যাচ্ছে। ওই স্থান থেকে সমুদ্রের পানি চট্টগ্রাম উপকূলে জমা হচ্ছে। চট্টগ্রাম উপকূলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বলছে, সোমবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
মোংলা ও পায়রা বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে রোববার থেকেই দেশে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে ঢাকায়। আকাশ মেঘে ঢেকে রয়েছে।
এছাড়া উপকূলীয় এলাকা খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় বইছে দমকা হাওয়া।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে সিত্রাং। উপকূলীয় ১৯টি জেলাতেই থাকতে পারে এর তাণ্ডব।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৫-০৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।